আমদানি হওয়ার পরও দেশের বাজারে পেঁয়াজের দাম আবার বেড়েছে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে রাজধানীর খুচরা বাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ১০ থেকে ১৫ টাকা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। দেশি পেঁয়াজ প্রতি কেজি মানভেদে ১৩০ থেকে ১৪০ টাকায় এবং আমদানি করা পেঁয়াজ মানভেদে ১১০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। চালের দামও বস্তাপ্রতি (৫০ কেজি) ১০০ টাকা পর্যন্ত নতুন করে বেড়েছে। বৃহস্পতিবার রাজধানীর মহাখালী কাঁচাবাজার, রামপুরা কাঁচাবাজার, বাড্ডা ও জোয়ারসাহারা বাজার ঘুরে এসব তথ্য জানা গেছে।পেঁয়াজ ও চালের দাম নতুন করে আবার বেড়ে যাওয়ায় অসন্তোষ বেড়েছে ক্রেতাদের মধ্যে। তবে বাজারে আগাম শীতকালীন সবজি চলে আসায় দাম কিছুটা কমতির দিকে। সপ্তাহের ব্যবধানে ডিমের দামও কিছুটা কমেছে।সবজির ও ডিমের দাম কমার পরও এখনো তা অনেক ক্রেতার নাগালের বাইরে। বাজারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, পেঁয়াজ আমদানিতে শুল্ক-কর ছাড় দেওয়ার পর ভারতসহ বিভিন্ন দেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানি হচ্ছে। এর পরও দেশের বাজারে পেঁয়াজের দাম সহনীয় পর্যায়ে আসছে না। উল্টো দাম বেড়েছে।ক্রেতারা বলছেন, বাজারে তদারকি না থাকায় অসাধু ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে নতুন করে পেঁয়াজের বাজার অস্থির করছে।
দেশি পেঁয়াজ আগে ১২০ টাকায় বিক্রি হলেও, সেটি এখন পাইকারিতেই কিনতে হচ্ছে ১২৫ টাকায়।’বাজার ঘুরে দেখা গেছে, রাজধানীর বাজারে এখনো চড়া দামে মুরগি বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৯০ থেকে ২০০ টাকায় এবং সোনালি মুরগি মানভেদে ৩০০ থেকে ৩২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ফার্মের মুরগির ডিম খুচরায় প্রতি ডজন ১৫৫ থেকে ১৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে পাইকারি পর্যায়ে প্রতি ডজন ডিম ১৫০ টাকায় কেনা যাচ্ছে। দেশি রসুন প্রতি কেজি ২৪০ টাকায় এবং আমদানীকৃত রসুন প্রতি কেজি ২২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। খোলা চিনি প্রতি কেজি ১৩৫ থেকে ১৪০ টাকা। মোটা চাল ব্রি-২৮ প্রতি কেজি ৬০ থেকে ৬২ টাকায় এবং মিনিকেট মানভেদে ৭৪ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
রাজধানীর বাজারে শীতকালীন সবজি আসা শুরু হওয়ায় সপ্তাহের ব্যবধানে দাম কিছুটা কমেছে। প্রতি কেজি গোল বেগুন মানভেদে ১০০ থেকে ১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহে এই বেগুন ২০০ টাকা কেজি পর্যন্ত বিক্রি হয়। লম্বা বেগুন ৮০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কাঁচামরিচ ২৪০ টাকা, টমেটো মানভেদে ১৬০ থেকে ২০০ টাকা, শিম ১৮০ থেকে ২০০ টাকা, করলা ১০০ টাকা, পটোল, ঝিঙ্গা, চিচিঙ্গা, ঢেঁড়স ও ধুন্দল ৭০ থেকে ৮০ টাকা, শসা মানভেদে ৬০ থেকে ৭০ টাকা, পেঁপে ৪০ থেকে ৫০ টাকা, কচুমুখী ৭০ থেকে ৮০ টাকা, আলু ৬০ থেকে ৬৫ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৭৫ থেকে ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। প্রতি পিস ফুলকপি ও বাঁধাকপি ৪০ থেকে ৫০ টাকা, প্রতি পিস লম্বা লাউ ৬০ থেকে ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।দিনাজপুরের হিলিতে ভারতীয় পেঁয়াজের দাম কেজিতে ৫ থেকে ১০ টাকা কমেছে। দেশের বাজার স্বাভাবিক রাখতে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি অব্যাহত রয়েছে। প্রতিদিনই ২২ থেকে ২৭ ট্রাক পেঁয়াজ আমদানি হচ্ছে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে। গত ১৯ থেকে ২৩ অক্টোবর পর্যন্ত এই বন্দর দিয়ে ভারতীয় ১০৭টি ট্রাকে ৩০৮৭ মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে। এসব পেঁয়াজ নতুন শুল্ক ২০ শতাংশ দিয়েই আমদানি হচ্ছে। তবু সেভাবে পেঁয়াজের দাম কমেনি। এতে হতাশা প্রকাশ করেছেন ক্রেতারা। হিলি খুচরা বাজার ঘুরে দেখা গেছে, মানভেদে ৮৫ থেকে ৯০ টাকা কেজি দরে ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে। দুই সপ্তাহ আগে সেই পেঁয়াজ মানভেদে ৯০ থেকে ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। আর দেশি পেঁয়াজ ১২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
হিলি স্থলবন্দরের পেঁয়াজ ব্যবসায়ীরা বলেন, অন্যান্য জায়গার তুলনায় হিলি স্থলবন্দরে কিছুটা হলেও পেঁয়াজের দাম কম। আগে যেখানে ৮ থেকে ১০ গাড়ি পেঁয়াজ আমদানি হতো, এখন প্রতিদিন ২২ থেকে ২৭ ট্রাক পেঁয়াজ আমদানি হচ্ছে। তবে আশা করছি, আর কিছুদিন পর পেঁয়াজের দাম ৫০ টাকার নিচে নেমে আসবে।